রাজিয়া সুলতানা,লোহাগড়া(পৌর)প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার শিয়েরবর গ্রামে সংখ্যালঘু সুজন কর্মকারের জমির উপর ইটের তৈরী সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেছে ভূমি দস্যুরা। শনিবার(১৬ জানুয়ারি) গভীর রাতে ভূমি দস্যুরা এঘটনা ঘটায়। রবিবার(১৭ জানুয়ারি) সকালে সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গা দেখে জমির মালিক ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি জানান। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ উপরের নির্দেশ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ অফিসার পাঠান। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ঘটনার সত্যতা দেখতে পান।
ভূক্তভোগী শালনগর ইউনিয়নের শিয়েরবর গ্রামের মৃত গোবিন্দ কর্মকারের ছেলে সুজন কর্মকার অভিযোগ করেন, শিয়েরবর এলাকার প্রভাবশালী ভূমি দস্যু ইসমাইল হোসেন ওরফে জাহিদ মোল্যার নেতৃত্বে কয়েকজনে কিছুদিন পূর্বে প্রস্তাব দেয় ”তোমার জমিটি ছেড়ে দাও, সেখানে স্কুল করবো। আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি হইনি। আমার চার সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে। ক্রয়সূত্রে ৪০নং বুজরুক শালনগর মৌজায় আমার ৪৫ শতক জমি। ওই জমিতে বাড়ি বানানোর জন্য সীমানা প্রাচীর করেছি। কিন্তু ভূমি দস্যু জাহিদ ও তার সহযোগিরা স্কুলে করবার নামে আমার জমিটি দখল করতেই সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেছে। আমি গরীব মানুষ। কর্মকারের কাজ করে সংসার চালাই। জমিটুকু চলে গেলে অসহায় হয়ে পড়বো।
শিয়েরবর গ্রামের ৮/১০জনে জানান, দু-তিন মাস আগে জাহিদ মোল্যা হাট-বাজার তৈরীর নামে আমাদের জমি দখল করে নিয়েছে। ভূক্তভোগী ওই এলাকার মোঃ মামুনুর রশিদ, শাহ মাখদুম ইসলাম মাকতুম, শরীফ রায়হানসহ ৮/১০ জনে জমি দখল করে নেয়া ও হুমকি দেয়ায় ভূমি দস্যু জাহিদ মোল্যার নামে লোহাগড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি সহ অভিযোগ দায়ের করেছেন। শিয়েরবর হাট-বাজার তৈরীর নামে অন্যের ২-৩ একর ফসলি জমি জবর-দখল করে নিয়ে দোকাপাট নির্মাণ করেছে জাহিদ মোল্যার নেতৃত্বে তার সহযোগিরা।
এ ব্যাপারে ভূক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক, লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও লোহাগড়ার সহকারী কমিশনার(ভূমি) এর নিকট লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন ওরফে জাহিদ মোল্যা সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কখনো সুজন কর্মকারের কাছে জমি চাইনি। আমার নিজের জায়গায় স্কুল করবো। তবে, যারা প্রাচীর ভেঙ্গেছে আমি নিন্দা জানাই।
লোহাগড়ার সহকারী কমিশনার(ভূমি) রাখী ব্যানার্জী এ বিষয়ে বলেন, হাট-বাজারের নামে অন্যের জমি দখলের অভিযোগ পেয়েছি। হাট-বাজার করতে হলে জমি আগে সরকারের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে হয়। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের আদেশ ব্যাতিত হাট-বাজার করা যায় না। কিন্তু তারা কোন আইন মানেনি। বিষয়টির তদন্ত চলছে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
লোহাগড়া থনার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ভূক্তভোগী সুজন কর্মকার ৯৯৯ এ ফোন করে অভিযোগ দিলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে অফিসার প্রেরণ করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। #