গরু ও ছাগল পালনে স্বাবলম্বী শার্শার পুটখালীর যুবক নাছির

0
169

শহিদুল ইসলাম,বাগআঁচড়া প্রতিনিধি:পরিশ্রমী এক আত্নপ্রত্যয়ী যুবক শার্শার পুটখালী গ্রামের নাছির উদ্দিন (৩৬)। হারার আগে হারেনি এই যুবক। গরু ছাগলের খামার করে বছরে আয় তার কোটি টাকার উপরে। খামারে আছে প্রায় ৪শত গরু। ছাগল ও ভেড়া আছে শতাধিক। মহিষ আছে প্রায় অর্ধশতাধিক। তবে এবছর করোনার দাপটে দেশের দক্ষিন পশ্চিম সীমান্তের এই খামার ব্যবসায়ীর মাথায় হাত উঠেছে। হতাশা প্রকাশ করেছে ওই ব্যবসায়ী সহ খামারের প্রায় ৭০ জন কর্মচারী।

যশোরের শার্শা থানার সীমান্তবর্তী গ্রাম পুটখালী। এই গ্রামে বুধো সরদার এর ছেলে নাছির। অভাব অনটনের সংসারে এক সময় সে স্কুল ত্যাগ করে বাবার সাথে ছোট খাট কাজ করত। এরপর সে কয়েকটি ছোট ছোট গরু নিয়ে খামার গড়ে তোলে। সেই থেকে বিগত ৮ বছরে তার আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক সে গরু খামারে বৃদ্ধি করে এগিয়ে যায়। এখন ওই খামারে আছে প্রায় ৪ শতাধিক গরু। শতাধিক ছাগল ও ভেড়া। আরো আছে প্রায় অর্ধশতাধিক মহিষ। এছাড়া তার খামারে আছে উন্নত জাতের গাভী গরু। সেখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮ শত লিটার দুধ উৎপাদন হয়। এই খামারের প্রতিটি গরুর মুল্য নিম্নে ৪ লাখ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত।

খামার ব্যবসায়ি নাছির উদ্দিন বলেন, গরু পালতে হয় সন্তান স্নেহে। এদের মাথার উপর পাখা এবং গবর পরিস্কার করার জন্য রয়েছে মেশিন। প্রতিদিন ১লাখ ২০ হাজার টাকার খাবার দিতে হয়। প্রতিবছর রাজধানী ঢাকা সহ চট্রগ্রাম থেকে আসে বেপারীরা। এছাড়া ট্রাকে করে এসব গরু ঢাকা চট্রগ্রাম নিয়েও বিক্রি করা হয়। তবে এবার পড়েছি মহাসংকটে। করোনা মহামারির কারনে পশুহাট বন্ধ করাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার ফলে গরুর বেপারীও যেমন আসছে না তেমন গরু আবার বড় বড় শহরেও নিতে পারছি না। আর কোরাবানি আসার আগে গরুর পিছনে খরচ ও বেড়ে যায়। গায়ে মাংস বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন একটু বেশী বেশী করে খাবার দিতে হয়। যাতে প্রতিটি গরুর প্রতিদিন ১ কেজি করে মাংস বৃদ্ধি পায়। সারাবছর গরু লালন পালন করে কোরবানির বাজার ধরে গরু ছাগল মহিষ ভেড়া বিক্রি করে তার প্রায় এক কোটি টাকার উপরে লাভ থাকে। তবে এবছর কি হবে জানি না। প্রতিটি কর্মচারীকে মাসে ১০ থেকে ১৪ হাজার পর্যন্ত বেতন দিতে হয়।

খামারে নিয়োজিত পুটখালী গ্রামের তৌহিদুর রহমান বলেন, আমরা নাছির এর খামারে কাজ করে সংসার চালাই। সামনে কোরাবানীর ঈদ। সরকারের দেওয়া করোনায় দীর্ঘ লকডাউনের পরে হাট চালু হলেও গরু বিক্রি করতে পারছি না। এবার ঈদে বেতন নিয়েও আশঙ্কা করছি। আমরা গরুকে খাবার দেওয়া পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা, গোসল করা সহ সময়মত ডাক্তার দেখানো কাজ করে থাকি।

খামরের ম্যানেজার আল আমিন বলেন,শেষ সময়ে সরকার যদিও স্বাস্থ্য বিধি মেনে হাট পরিচালনা করার অনুমতি দিয়েছে।আশা করছি আমরা গরু বিক্রি করতে পারব। তা না হলে পথে বসতে হবে। কারন সারা বছর এসব পশু পালতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। কোরাবানির হাটে বিক্রি করার আশায়। আর এসব গরু পালতে অত্যান্ত কষ্ট হয় । কখনো কোন গরুর অসুখ বিসুখ হয় সব দিক খেয়াল রেখে আমাদের চলতে হয়। এক কথায় এই খামার থেকে প্রায় ৭০ টি পরিবার চলে। বছর শেষে খরচ বাদে প্রতিটি গরু থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ হয় বলে সে জানায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here