নিজস্ব প্রতিবেদক কুুষ্টিয়াঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সবিনয় নিবেদন
‘আমাদের ঐতিহ্য আমরা বাঁচাতে চাই’ – কুষ্টিয়ার তাঁতশিল্প প্রাচীনকাল থেকেই সমৃদ্ধ। এই উপমহাদেশে অবিভক্ত ভারতবর্ষের বস্ত্র শিল্পের ইতিহাসে এক বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে রয়েছে তৎকালীন পূর্ব বাংলার নদীয়া জেলার কুষ্টিয়াতে স্থাপিত ‘দি মোহিনী মিলস্ লিমিটেড’ এর নামটি। প্রায় শতবিঘা জায়গায় ঐতিহ্যবাহী এই মিলটি স্থাপন করেন শ্রীমোহিনী মোহন চক্রবর্ত্তী। একসময় এই মিলটি ছিল এতদঞ্চলের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। ব্রিটিশ শাসনামলে উপমহাদেশের ইতিহাসে যে ক’টি বস্ত্রশিল্পের নাম পাওয়া যায় মোহিনী মিল তারমধ্যে অন্যতম। অন্যদিকে অবিভক্ত বাংলায় মোহিনী মিলের স্থানটি ছিল অনন্য উচ্চতায়, কারণ এ বঙ্গের পুরো ভূ-ভাগ জুড়ে এই একটি মাত্র বড়োশিল্প প্রতিষ্ঠানই সে সময় ব্যক্তিগত পর্যায়ে গড়ে উঠছিল। ইতিহাসে এ রকম পাতাজোড়া সম্মান ঐ সময়ে আর কিছুতেই এতো অনায়াসে আসেনি। বর্তমানে মিলটি যুগ যুগ ধরে বন্ধ আছে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘টেগর লজ, কুষ্টিয়া’ এই মোহিনী মিলের সন্নিকটে হওয়াতে শ্রীমোহিনী মোহন চক্রবর্ত্তী পরিবারের সাথে তাঁর ছিল গভীর সর্ম্পক। কুষ্টিয়ার তাঁতশিল্প নিয়ে গবেষণা করতে যেয়ে জানাযায় কুষ্টিয়াতে মোহিনী মিল বন্ধের পরে সেই ধরনের সরকারি কোন প্রতিষ্ঠান বা টেক্সটাইল মিল আজও গড়ে ওঠেনি। তবে টেক্সটাইল নিয়ে জানার বা বোঝার প্রতিষ্ঠান দেশে অপ্রতুল। কুষ্টিয়ার গবেষকদের জোর দাবি কুষ্টিয়াতে একটি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এই মোহিনী মিলের জায়গাতেই প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। যার নাম হতে পারে ‘মোহিনী মোহন টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালে ব্রিটিশ স্কুল অব উইভিং নামে ঢাকার নারিন্দায় প্রতিষ্ঠানটি চালু হয়। ১৯৩৫ সালে নাম হয় পূর্ব বাংলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। ১৯৬০ সালে এটি তেজগাঁওয়ে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৭৮ সালে কলেজে রূপান্তর করে নতুন নামকরণ হয় বস্ত্রকৌশল ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয় । বিশ্বমানের বস্ত্রপ্রকৌশলী গড়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে এটি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করেন। বর্তমানে এটিই বাংলাদেশের একমাত্র টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালে ব্রিটিশ স্কুল অব উইভিং যদি ২০১০ সালে টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে তাহলে ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মোহিনী মিল ‘মোহিনী মোহন টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়’ কেন নয়? এখন আমাদের সময় এসেছে তাঁতশিল্পের মধ্যে যে মেধা-মনন এর সম্মিলন, সেটা এখানে কাজে লাগানোর জায়গা তৈরি করতে হবে। তাঁতশিল্পের উন্নয়নকে আরো সম্প্রসারিত করতে হলে গুণগতমান ও বাংলার ঐতিহ্য নিশ্চিত করে বর্তমান যুগোপযোগী শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। দেশের টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা আরো বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা। আমাদের কুষ্টিয়া মোহিনী মিলের জায়গায় একটি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি আকুল আবেদন রেখেন গুনিজনেরা। বিশিষ্ট গবেষক সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম বলেন কুষ্টিয়াতে বেদখল হওয়া মোহিনী মিলের জায়গা উদ্ধার করে এখানে ইপিজেট অথবা মোহিনী মোহন বিশ্ববিদ্যালয় করলে দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের অনেক ভালো হবে বলে আমি মনে করি তাই জননেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা কুষ্টিয়া সহ দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য মোহিনী মোহন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করবে।