খুলনা প্রতিনিধি : খুলনায় ইফতারে বাড়তি অনুষঙ্গ নানা হালিম। নগরীর সরকারি পাইওনিয়ার মহিলা কলেজের সামনে দুপর থেকে হালিম সংগ্রহে ভিড় লেগেই থাকে। দূর-দূরান্ত থেকে হালিম কিনতে মানুষ ছুটে আসেন এখানে। সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ কেউ বাড়ি থেকে পাত্র নিয়ে এসেছেন। এছাড়া নানার দোকানেও মাটির পাত্র আছে। ক্রেতারা হালিম চাইছেন আর দোকানের সাতজন কর্মচারী মাটির পাত্র ভরে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। নানার সহকারীদের একজন মো. ফরিদ বলেন, এখানে ছয় বছর ধরে কাজ করছি। আমরা মূলত সহায়তা করি। নানা নিজেই রান্না করেন। সকাল সাতটা থেকে প্রক্রিয়া শুরু হয়। দুপুরের একটু আগে রান্না ওঠে চুলায়। নানা হালিম তৈরিতে সোনামুগ ডাল, পোলাও চাল, গম, দেশি ঘি, খাসি ও নিজস্ব মসলা ব্যবহার করা হয়। দুপুর দেড়টার মধ্যে রান্না শেষ হয়। বেলা দুইটা থেকে হালিম বিক্রি শুরু হয়। নানা হালিমের সত্ত¡াধিকারী হজরত আলী। তার বয়স এখন ৭৮ বছর। ১৯৯৩ সাল থেকে তিনি হালিম বিক্রি শুরু করেন। গত ৩০ বছর ধরে শুধু রমজানেই হালিম বিক্রি করেন তিনি। মিষ্টভাষী মানুষটিকে সবাই নানা বলে ডাকেন। একারণে তার হালিমের নামও হয়েছে ‘নানা হালিম’। হালিমের মান ঠিক রাখতে এখনো তিনি নিজের হাতেই রান্না করেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এবার হালিমের দামও বেড়েছে। এবছর সেখানে ১৫০, ৩০০, ৫০০, ৮০০ ও ১ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের হালিম পাওয়া যাচ্ছে। নগরের টুটপাড়া এলাকা থেকে হালিম কিনতে আসা কলেজ ছাত্রী রাফিয়া আলম আমিমা বলেন, নানা হালিম খুলনার ইফতারের একটা ঐতিহ্য। দেরি করে আসলে ভিড় বেশি হয়। আবার পাওয়া যায় না। তাই একটু তাড়াতাড়ি এসেছি। তারপরও মোটামুটি বেশ বড় লাইন। নানার সহযোগী হজরত আলী বলেন, রোজার সময় প্রতিদিন ১৩০-১৫০ কেজি হালিম তৈরি করি। মাগরিবের আগেই শেষ হয়ে যায়। গত বছর করোনায় বিক্রি ভালো ছিল না। আবার এবার দাম বাড়ায় প্রথম দিন একটু কম করেছি। তবে বিক্রি শুরুর প্রথম এক ঘণ্টাতেই অর্ধেকের বেশি শেষ হয়ে গেছে।
নানা হালিমের সঙ্গে রয়েছে মাগুরা চিকেন। ইফতারির নানা সামগ্রীও রয়েছে তার দোকানে। পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনিসহ, শাহী জিলাপি, বুন্দিয়াসহ নানা সামগ্রী নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে।