সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে সেই মেধাবী ছাত্রী আফরিনা

0
145

নোমান পারভেজ, ঝিনাইদহ : আফরিনার ইচ্ছে ছিল সে আবারও শিাঙ্গনে ফিরবে, সহপাঠীদের সাথে মাতবে আনন্দে। পড়াশোনা শেষ করে সংসারের হাল ধরবে। দিনমজুর পিতার দুঃখ ঘুচাবে সে। এমনটিই শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিল মৃত্যুর আগে আফরিনা। কিন্তু ইচ্ছেটা অপূর্ণই থেকে গেল তার। মরণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে পরাজিত হয়ে চলে গেল না ফেরার দেশে। ৩ এপ্রিল রোববার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে সবাইকে কাদিঁয়ে চলে গেছেন ওপারে। আফরিনা শৈলক‚পা উপজেলার কাঁচেরকোল ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল আজিজ বিশ্বাসের মেয়ে। আফরিনার পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণীতে অধ্যায়ণরত অবস্থায় বেণীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতে তার মেয়ে। ক্যাপ্টেনের দ্বায়িত্ব থাকা অবস্থায় ফুটবল খেলতে গিয়ে বা পায়ে আঘাত পায় আফরিনা(১৬)। সেসময় কিছু বুঝতে না পারলেও কয়েক বছর পর সেখানে শুরু হয় ব্যাথা। দিনে দিনে সেখানে ফুলতে শুরু করে। কয়েক বছরের মধ্যে ব্যাথাটা ফুলে ক্যান্সারে রূপ নিয়েছিল। তিনি আরো জানান, তার মেয়ে বোয়ালিয়া স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেনীতে এ প্লাস পেয়ে পাশ করে। কোনোদিন এক ছাড়া দুই রোল হয়নি তার। মেয়ের স্বপ্ন ছিল শিতি হবে। খেলোয়াড় হবে মুখ উজ্জল করবে। সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু কি হয়ে গেল আমার মেয়ের। আরো জানা যায়, মাঝে আফরিনাকে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা করিয়েছিল তার পিতা। পরে অর্থের টানাপোড়েনে পড়েন তার পরিবার। যার কারণে চিকিৎসা বন্ধ ছিল বেশ কয়েক বছর। সর্বশেষ রক্তদাতা সংঘ শৈলক‚পা সংগঠনের তৎতাবধানে মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে গত দুই সপ্তাহ আগে আফরিনার চিকিৎসা শুরু হয়। তার চিকিৎসা সাহায্যের আবেদনে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বহুলভাবে নিউজ প্রচারিত হয়। পরে দেশ-বিদেশ থেকে তাকে নগদ অর্থ সাহায্য পাঠাতে থাকেন অনেকে। এ খবর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও পৌছে যায়। রাষ্ট্রীয় খরচে আফরিনাকে চিকিৎসার আশ্বাসও দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে নিয়তির বিধি বাম। সবাইকে কাঁদিয়ে রোববার (৩ এপ্রিল) দুপুর ২টায় ওপারে পাড়ি জমিয়েছেন আফরিনা। মেধাবী শিার্থী আফরিনার অকাল মৃত্যুর খবরে তার পরিবারসহ গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এছাড়া শৈলকুপা উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here