মালিকুজ্জামান কাকা, যশোর : যশোরের অভয়নগর উপজেলায় কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করে সফলতা পেয়েছেন শেখ আবুল বাসার নামের এক কৃষি উদ্দোক্তা। তার খামারে উৎপাদিত সার জমিতে ব্যবহার করে এলাকার কৃষক বিষমুক্ত ফসল ও সবজি উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছেন। প্রকৃত কৃষি ব্যবস্থা চালুতে কৃষকরা এখন রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে ভার্মি কম্পোষ্ট বা কেঁচোসারে ঝুঁকছেন। তাছাড়া মাটির গুণাগুণ ঠিক রাখতে কেঁচো সার, জৈব সার ব্যবহারের বিকল্প নেই।
উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর সভার ২ নং ওয়ার্ডের কাপাশহাটী গ্রামের আবুল বাসার সম্পুর্ন নিজ উদ্যোগে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) তৈরির উদ্যোগ নেন। গোবর ও কেঁচোর সমন্বয়ে এ সার তৈরি করতে প্রথম দিকে তার প্রতিবেশীদের দ্বারা বেশ সমালোচিত হলেও এখন তার সফলতা দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।
বানিজ্যিক ভাবে জৈব সারের চাহিদা বাড়তে থাকায় তিনি ২০২০ সালে একটি খামার তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে সল্প পরিসরে সার উৎপাদন শুরু করলেও বর্তমানে তার খামারে প্রতিমাসে উৎপাদিত সারের পরিমাণ প্রায় ৪ টন।
কেচো সার ব্যবহার করা কৃষক শাহাদাত বলেন, ‘কেঁচো সার ব্যবহার করে তাদের পটল ও ধান ক্ষেতের উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাসায়নিক সারের ব্যবহার কম করায় ফসল উৎপাদনে খরচ কমেছে।
কৃষি উদ্দোক্তা শেখ আবুল বাসার বলেন, বিশেষ কিছু প্রজাতির কেচো গোবর খেয়ে যে মল ত্যাগ করে সেটাই কেঁচো সার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। কৃষকেরা জমির গুণাগুণ ঠিক রেখে অল্প খরচে নিরাপদ সবজি ও ফসল উৎপাদন করতে পারে এ লক্ষ্যে আমি কেচো সার নিয়ে কাজ করছি। প্রতি মাসে আমার খামারে উৎপাদিত কেঁচো সার ও কেঁচো বিক্রি করে যথেষ্ট লাভবান হচ্ছি। তবে সরকারি কোন প্রকার সহযোগিতা না পাওয়ায় তিনি হতাশ প্রকাশ করেন। সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা পেলে খামারটি আরও সম্প্রসারণ করার ইচ্ছা ব্যাক্ত করেন।
স্থানীয়র বলেন, শেখ আবুল বাসার একজন সফল নিরাপদ সার তৈরির উদ্যোক্তা। পাশাপাশি সংবাদ কর্মী এই আবুল বাশার। দেশের জন্য তার কৃষি উপলদ্ধি জাতির জন্য অতি প্রয়োজনীয়। মাটি, কৃষক রক্ষায় নিরাপদ কৃষি বলয় তৈরি করতে হবে। এটিই তার শ্রেষ্ঠ সময়। কম্পোষ্ট বা কেঁচোসার আদি থেকে চলে আসছে। তার বিকল্প কখনোই হবে না কেননা সেটি মহান সৃষ্টিকর্তার অপরিসীম কৃষি সহায়তা। তার প্রয়োজন কখনো শেষ হবে না বা ফুরাবে না। বরং তা নতুন করে আরো বেশি হারে অতি প্রয়োজনীয় কৃষি পণ্য হিসাবে পরিগনিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য কেচো সার অনেক প্রয়োজনীয়। জমিতে কম খরচে অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব। এ কারণে প্রতিনিয়ত কৃষকদের কেঁচো সার ব্যবহার করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।’