রানা আহম্মেদ অভি, ইবি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ঘটনায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পেয়েছেন অভিযুক্তরা। গত বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান ।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ অভিযুক্তকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়। পরে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাতভর ওই ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় শোকজের জবাব দেয়। পর গত মঙ্গলবার ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং তা উপস্থাপন করা হয়।
আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান বলেন, ‘ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের জবাব উত্থাপন করা হয়। সেখানে সব ঠিক থাকলেও এক অভিযুক্ত ওই জবাবে স্বাক্ষর করেননি। তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনে আগামী ১২ জুন সশরীরে উপস্থিত হয়ে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। পরে বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের আদেশে আদিষ্ট হয়ে অভিযুক্তদের প্রত্যেকের জন্য চিঠি ইস্যু হচ্ছে। দ্রুত চিঠি তাদের কাছে পৌঁছে যাবে। তারা আগামী ১২ জুন উপস্থিত হয়ে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারবে। এরপর কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’
এ ঘটনায় গত ০৪ মার্চ পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা (সেশন: ২০১৭-১৮), চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি (সেশন ২০২০-২১), আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম (সেশন: ২০২০-২১), ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম (সেশন: ২০২০-২১) ও একই বিভাগের একই সেশনের মুয়াবিয়া জাহানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একইসঙ্গে তাদের বিষয়ে কেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না এ মর্মে শোকজ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গনরুমে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র ধারণা করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তাঁর সহযোগিদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ১৪ ফেব্রয়ারী ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনা দেশজুড়ে আলোচিত হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উচ্চ আদালত তদন্ত কমিটি গঠন করে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়, হল ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ এবং হাইকোর্ট কর্তৃক পৃথক পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। এর প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় এবং শাখা ছাত্রলীগ থেকেও বহিষ্কার করা হয়।