ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, ডুমুরিয়া (খুলনা) । খুলনার ডুমুরিয়ায় একটি কওমী মাদ্রাসার মুহতামিম কর্তৃক ঈদগাহ ও মাদ্রাসার (সৈয়দপুর ট্রাষ্টের) জমি নিজ নামে বন্দোবস্ত নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের বেতাগ্রাম (চারা বটতলা) নামক স্থানে মোট ৫৮ শতক জমির উপরে এই বেতাগ্রাম ফয়জুল উলুম মাদ্রাসা ও ঈদগাহ প্রতিষ্ঠিত। এব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে এলাকবাসী গণস্বাক্ষর করে খুলনার জেলা প্রশাসকের নিকট একটি আবেদন করেছেন।
আবেদন সূত্রে জানা যায়, জমিটির সি এস রেকর্ডিয় মালিক ছিলেন ওই গ্রামের টেনাই মোড়ল গং। পরবর্তীতে উক্ত জমি সৈয়দপুর ট্রাষ্টের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। এমতাবস্থায় , এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রায় ২০বছর আগে সেখানে একটি কওমী মাদ্রাসা ও ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করা হয়। উক্ত মাদ্রাসার মুহতামিম হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করেন বেতাগ্রামের মৃত ফজর আলী শেখের ছেলে মুফতি আব্দুস সোবহান। সেই থেকে তিনি তার মত করে মাদ্রাসা ও ঈদগাহ পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু তার খামখেয়ালীপনা মনোভাবের কারনে মাদ্রাসাটি বর্তমানে ছাত্র শুন্য হয়ে বন্ধ হওয়ার উপক্রম প্রায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে মাদ্রাসায় বর্তমানে ১০/১২জন ছাত্র আছে, তাও অনিয়মিত। সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার বারান্দায় একটি বসার চৌকি রয়েছে যেiখানে ৫/৬জন ছাত্র বসে লেখাপড়া করতে পারে। এব্যাপারে জানতে চাইলে মুহতামিম আব্দুস সোবহান শেখ বলেন, মাদ্রাসায় অনেক ছাত্র ছিল। করোনার সময় লকডাউনে পড়ে মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে গেলে ছাত্ররা বাড়ি চলে যায়, তারপর ছাত্র সংখ্যা কিছুটা কম হয়ে গেছে। বর্তমানে মাদ্রাসার ছাত্র সংখ্যা কত জানতে চাইলে তিনি প্রথমে আমতা আমতা করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন ২৫/৩০ জনের মত আছে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে মাদ্রাসার এখন ১০ থেকে ১২জন ছাত্র আছে বলে জানা যায়। মাদ্রাসার কোন পরিচালনা কমিটি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কওমি মাদ্রাসায় কমিটি থাকলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় , এজন্য কোন কমিটি করা হয় না।
জমির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন এখানে ঈদগাহ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় তখন বন বাঁদাড়ে ভরা ছিল, বড় বড় গর্ত ছিল। আমি নিজে পয়সা খরচ করে মাটি এনে সেই গর্ত ভরাট করেছি, তাতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। এজন্য আমার নিজের নামে দীর্ঘ মেয়াদী ডিসিআর দেওয়ার জন্যে সৈয়দপুর ট্রাষ্টে আবেদন করেছি। তবে জমি আমার নামে বরাদ্দ নিলেও আজীবন এখানে মাদ্রাসা ও ঈদগাহ থাকবে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় মুফতি সাহেব সব সময় নিজের ইচ্ছাখুশি মত চলাফেরা করেন। কারও কোন কথা তিনি শোনেন না। তার সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, এখানে আমি যা বলব তাই হবে কারও অপছন্দ হলে সে এখানে নামাজ পড়তে আসবে না। একারনে এলাকাবাসী ব্যক্তি নামে বন্দোবস্ত বাতিল করে ঈদগাহ ও মাদ্রাসার নামে বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।