স্টাফ রিপোর্টার : ইসিটি খাতে প্রতিভা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখতে এবং বাংলাদেশী নারীদের জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো আইসিটি প্রতিযোগিতা চালু করেছে হুয়াওয়ে দক্ষিণ এশিয়া অফিস। সম্প্রতি ঢাকায় অবস্থিত হুয়াওয়ে বাংলাদেশ একাডেমিতে ‘উইমেন ইন টেক ২০২৩’ শীর্ষক এই প্রতিযোগীতা উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশে এই প্রতিযোগিতার কৌশলগত সহযোগী ইউনেস্কো।হুয়াওয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো প্রযুক্তি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো। ‘টেক ফর হার, টেক বাই হার, টেক উইথ হার’ এই থিম নিয়ে ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী হুয়াওয়ে‘উইমেন ইন টেক’ প্রোগ্রামটি চালু করে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (STEM) বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া নারী শিক্ষার্থী কিংবা গত দুই বছরের মধ্যে স্নাতক সম্পূর্ণ করেছে এমন নারীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।হুয়াওয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও প্যান জুনফেং এবং ইউনেস্কো ঢাকা কার্যালয়ের অফিসার ইন চার্জ সুজান ভাইজ যৌথভাবে এই প্রোগ্রামের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি; বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার; বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মাহমুদা নাজনীন এবং বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া।অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রগতি হচ্ছে। চাকরির বাজারে আমাদের নারীদের সরব উপস্থিতি আছে এবং সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীরা যুক্ত হচ্ছে। আমাদের শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে হুয়াওয়ের নতুন উদ্যোগ ‘উইমেন ইন টেক’ এবং এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত এ ধরনের অন্যান্য সব উদ্যোগ প্রশংসনীয়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে আমাদের পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই।’হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার সিইও প্যান জুনফেং বলেন,‘আমরা প্রত্যাশা করি যে, আইসিটি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের নারীদের এদেশের আইসিটি খাতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা রয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে এবং এ দেশে নতুন প্রযুক্তিগত ও বাণিজ্যিক অগ্রগতি আনবে। ‘উইমেন ইন টেক’ উদ্যোগের মাধ্যমে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য আরেকটি সুযোগ তৈরি করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত।’এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে নিবন্ধন প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করা হয়েছে।আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে witbd@huawei.com -এ নিজেদের সিভি পাঠিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের পর, আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হবে।পরবর্তীতে, শীর্ষ ৫০ জন মনোনীত আবেদনকারী হুয়াওয়ে বাংলাদেশ একাডেমিতে আট দিনের (অফলাইন এবং অনলাইন) বুট ক্যাম্প প্রশিক্ষণে যোগদান করবেন। পরবর্তী পর্যায়ে, হুয়াওয়ে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে ভিন্ন-ভিন্ন দল গঠন করবে। এরপর মেন্টরদের সংশ্লিষ্টতায় এই দলগুলো তিন মাসব্যাপী প্রকল্প এবং ধারণা উপস্থাপনা (প্রেজেন্টেশন) প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে, যার ফলাফলের ভিত্তিতে সেরা তিন বিজয়ীর/দলের নাম ঘোষণা করা হবে। ছয় মাসব্যাপী এই অনুষ্ঠানের চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার হিসেবে পাবে তিন লাখ টাকা। প্রথম এবং দ্বিতীয় রানার আপ পাবে যথাক্রমে দুই লাখ ও এক লাখ টাকা। বিজয়ীরা চীনে হুয়াওয়ের সদর দফতরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি, ভিসি ও এঞ্জেল ইনভেস্টরদের সাথে দেখা করার ও তাদের ধারণা উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রকল্প শুরুর ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিনিয়োগ লাভের সুযোগ পাবেন। উল্লেখ্য, হুয়াওয়ে সিডস ফর দ্য ফিউচার, আইসিটি ইনকিউবেটর এবং অন্যান্য আইসিটি ও প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও কর্মসূচির মতো কার্যকরী ও সময়োপযোগী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে আইসিটি খাতে প্রতিভা বিকাশে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে এবং এ খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। হুয়াওয়ের ২০২২ আইসিটি ইনকিউবেটরে দ্বিতীয় রানার-আপ রিল্যাক্সি’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী জাহ্নবী রহমান ‘ফোর্বস ৩০ আন্ডার ৩০’ এশিয়া ২০২৩ এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন।