যশোর ডেস্ক : ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ…’।
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের চাঁদ দেখার অপেক্ষায়
সবাই। আজ ২৯ রমজান, সন্ধ্যায় দেশের আকাশে কোথাও শাওয়ালের
চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর। রেডিও-
টিভিসহ গণমাধ্যমে শাওয়ালের চাঁদ দেখার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে
সঙ্গে দেশময় শুরু হবে খুশির আমেজ। সৌদিআরবে যেহেতু ঈদ
হবে আগামীকাল বুধবার। সেহেতু পরশু বৃহস্পতিবার উদযাপিত
হবে ঈদ। ঈদের আনন্দে ভাসবে সারা দেশ। অনুষ্ঠিত হবে দেশের
বৃহত্তম এ ধর্মীয় উৎসব। সেক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি ছুটি
বেড়ে যাবে আরও একদিন। ঈদের দিন আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য
একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে সবাই শামিল হবেন ঈদগাহ মাঠ বা
উš§ুক্ত জায়গায়। সবাই মন খুলে ঈদ আনান্দ উপভোগ করবে।
আনন্দের বন্যায় সমাজ থেকে ভেসে যাবে হিংসা, বিদ্বেষ। ঈদ
মোবারক। এদিকে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে
নিতে এর মধ্যে অনেকেই পৌঁছে গেছেন গ্রামের বাড়িতে।
বাস, ট্রেন বা লঞ্চে গত কয়েকদিন ধরে ছিল ঘরে ফেরা মানুষের
উপচে পড়া ভিড়। যশোরের জুতা ও কাপড়ের বাজারে ছিল প্রচন্ড ভিড়।
মার্কেট শপিং মল থেকে ফুটপাথ ক্রেতা-বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার
করছেন শেষ মুহূর্তের বেচাকেনায়। ঈদ উপলক্ষে শহরের সরকারি ভবন,
বিভিন্ন মসজিদ ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। এবার
পহেলা বৈশাখ থাকায় দেশের গণমাধ্যম গুলো ঈদের ছুটি ছয় দিন
উদযাপন করবে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপগুলো ‘ঈদ মোবারক’
ও কলেমা খচিত পতাকায় সজ্জিত করা হচ্ছে। এ বছর ঈদুল ফিতর
উদযাপনের প্রথম দিনটি নিয়ে আরব ও মুসলিম
জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে
মতভেদ দেখা দিয়েছে। গতকাল সৌদি আরবের আকাশে ঈদের চাঁদ
না দেখা যাওয়ায় এবার ঈদ বৃহস্পতিবার হবে। উভয়ক্ষই নিজেদের
জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনার ভিত্তিতে এমনটি দাবি করছেন।
সাধারণত সৌদি আরবের পরের দিন বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর
উদযাপিত হয়। সেই হিসেবে বৃহস্পতিবার দেশের বৃহত্তম এ
ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের দিন আনন্দ ভাগাভাগি করার
জন্য একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে সবাই শামিল হবেন ঈদগাহে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক
বাণীতে দেশবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাণীতে তারা
বিশ্ব মুসলিমের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেছেন। যারা এক মাস রোজা রেখে অভুক্ত থাকার কষ্টকে অনুভব করেছেন,
নামাজ, তারাবিহ, ইবাদত-বন্দেগি ও ইসলামের অনুশাসন পালন
করেছেন, তাদের জন্য এ ঈদ আনন্দ বেশি উপভোগের, উচ্ছ্বাসের ও
শান্তির। তাদের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের এক মহাপুরস্কার হচ্ছে
ঈদ। পবিত্র কোরআনের বর্ণনা মতে, এক মাস রোজা রাখার পর
মুসলমানরা যখন নতুন পায়জামা-পাঞ্জাবি তথা পছন্দের পোশাক
পরে, দেহে আতর-খুশবু মেখে ঈদগাহে যান, তখন ফেরেশতারা তাদের
সংবর্ধনা জানান। স্বর্গীয় সব বাণীতে তাদের অভিনন্দিত করা
হয়। ঈদুল ফিতর মুসলিম উম্মাহর জন্য এক সর্বজনীন ধর্মীয়
উৎসব তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ধনী-দরিদ্র, ছোট-বড়, শাসক-
শাসিত ও আবাল-বৃদ্ধবণিতা সবার জন্য ঈদের আনন্দ যেন সমান ও
ব্যাপক হয়, ইসলামে সেই ব্যবস্থা রয়েছে। পবিত্র রমজানে বিত্তবানরা
এগিয়ে এলে এবং দান-খয়রাত করলে, জাকাত ও ফিতরা প্রদান করলে
দরিদ্ররা ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারবে বেশি। তাদের মুখেও হাসি
ফুটবে এবং ঈদের ভোর আসবে তাদের জন্য আনন্দবার্তা নিয়ে।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ঈদের খোতবায় দান-খয়রাতকে
বিশেষভাবে উৎসাহিত করতেন। তাই ঈদের নামাজের আগেই
ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা তাদের নিজ নিজ জাকাত ও সদকাতুল ফিতর
(ফেতরা) আদায় করে থাকেন।