মিশকাতুজ্জামান,নড়াইল:তারা দুই বন্ধু। এক সঙ্গেই সারা দিন চলাফেরা। এভাবে এক দিন শখের বশে তারা ভাবলেন-একসঙ্গে কিছু করলে কেমন হয়। সেই চিন্তাথেকেই গড়লেন বরই বাগান। প্রথম বছরেই লিজনেওয়া প্রায় ১২০ শতাংশ জমিতে বরই চাষ করেসফল হয়েছেন তারা। বলছি,নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের মাধবাটি গ্রামেরদুই বন্ধু আব্দুল্লাহ আল মামুন জিকু ও রুবায়েতইসলাম টলিনের কথা। অদম্য ইচ্ছা ও মনোবলনিয়ে বাগান শুরু করে আজ তারা স্বাবলম্বী।
জানা যায়, উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের মাধবাটি গ্রামের দুই বন্ধু আব্দুল্লাহ আল মামুন জিকুও রুবায়েত ইসলাম টলিন শখের বশে সাতক্ষীরাথেকে কাশ্মিরি বরই, থাই, সিডলেস ও বলসুন্দরীজাতের পাঁচ শতাধিক চারা এনে লিজ নেওয়া প্রায়১২০ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন।এরপর বাগানের প্রতিটি গাছে প্রচুর ফল আসে। প্রথমবছরই তারা লাভবান হয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, এ বছর জেলায় ১৪৮ হেক্টর জমিতে কুল চাষকরা হয়েছে। এর মধ্যে নড়াইল সদর উপজেলায় ৮৩ হেক্টর,লোহাগড়া উপজেলায় ৪০ এবং কালিয়াউপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ করা হয়।যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭১৫ মেট্রিক টন। এতে সদর উপজেলায় ৩৯০, লোহাগড়া উপজেলায় ১৯৮ও কালিয়া উপজেলায় ১২৭ মেট্রিক টন উৎপাদনেরলক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
রুবায়েত ইসলাম টলিন বলেন, বাগান করতেব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। বাগান তৈরিরশুরু থেকে আমি নিজে ও আমার বন্ধু জিকুকে নিয়ে বাগান পরিচর্যার কাজ করে যাচ্ছি। গাছেরযত্ন নেওয়া এবং সঠিক সময় জৈব ও গোবর সারসহ কিছু রাসায়নিক সারও গাছের গোড়ায় দূরত্ব বজায়রেখে দিচ্ছি। প্রথমবারের মতো বাগান থেকে বরইসংগ্রহ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে প্রায় দেড় লাখটাকার বরই বিক্রি হয়েছে। এখনও প্রায় বরই ৪ লাখ টাকার বিক্রি হবে বলে আশা করছি। প্রথমবছরেই আমরা লাভের মুখ দেখেছি, এটা আমাদেরজন্য আনন্দের।
আরেক উদ্যোক্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জিকুবলেন, আমি ও আমার বন্ধু শখের বশে ১২০ শতাংশ জমিতে বরই চাষ করছি। তবে বাজারজুড়েকাশ্মিরি জাতের আপেল কুল খেতে সুস্বাদু হওয়ায়জমি থেকে পাইকারি ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রিহচ্ছে। এতে করে আমাদের সব খরচ বাদ দিয়ে দুইথেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে আশাকরছি।
বাগান দেখতে আসা স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান,এই বাগান দেখে তারা অভিভূত। তাদের জমিতেও এ ধরনের কুল বাগান করবেন বলে জানান। এইকুল বাগানের কথা শুনে দেখতে এসেছেন তারা। আগামী বছর তারাও এখান থেকে কুলের চারা ওপরামর্শ নিয়ে চাষ করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকৃষিবিদ ফারজানা আক্তার জানান, লোহাগড়াউপজেলায় কাশ্মিরিলসহ বিভিন্ন জাতের কুলেরআবাদ হচ্ছে। আকারে বড় ও সুস্বাদু কাশ্মিরি কুলেরবেশ চাহিদা রয়েছে। আমাদের মাঠপর্যায়েরকর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েথাকেন। এই কুল রোপণ ও চাষের জন্য উপজেলাকৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।