স্টাফ রিপোর্টার, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ): পরকীয়ার জেরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আহসানুল ইসলাম অর্কিড নামে এক
যুবককে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যাচেষ্টা চালানোর অভিযোগ
ওঠে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে। দগ্ধের ৫ দিন পর
চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল ১১ টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের
বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। অর্কিড কালীগঞ্জ
উপজেলার কাঁঠালবাগান এলাকার ওসমান গণির ছেলে।
অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান রিংকু কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক
কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি
নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের বড় ভাইয়ের ছেলে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে অর্কিডের চাচা আমিনুর রহমান জানান, গত
৫ দিন ধরে অর্কিড ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন
ছিল। সোমবার সকাল ১১ টার দিকে অর্কিড মারা গেছে। এখন মরদেহ
বাড়িতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
অর্কিডের বাবা ওসমান গনি বলেন, আমার একমাত্র ছেলে আর নেই। সাবেক
এমপি আনারের ভাইপো রিংকু, তার স্ত্রী তারিন ও ফয়সাল আমার ছেলেকে শেষ
করে দিয়েছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। ঢাকার শাহবাগ থানা
থেকে ছাড়পত্র পেলেই তিনি মামলা করবেন।
জানা গেছে, গত প্রায় ১ মাস আগে কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের
সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান রিংকুর স্ত্রী তারিন খাতুনকে পালিয়ে
নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে অর্কিড নামের ওই যুবক। এরপর থেকে অর্কিড ও
তারিন পলাতক ছিল। তারিন দুই কন্যা সন্তানের জননী ও অর্কিড দুই
সন্তানের জনক বলে জানা গেছে। গত বুধবার (৫ মার্চ) সকাল ৭ টার দিকে
যশোর পুরাতন কসবা রায়পাড়া বটতলা মসজিদের কাছে মীমাংসার কথা বলে
অর্কিডকে যশোরে ডাকেন তারিন। এ সময় তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন
ধরিয়ে দেওয়া হয়। সাবেক এমপি আনারের ভাইপো মনিরুজ্জামান রিংকু,
তারিন খাতুন ও ফয়সাল নামে এই তিনজন শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে
পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা অর্কিডের পরিবারের স্বজনদের খবর দিলে তারা গিয়ে তাকে
উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ভয়ে যশোরের কোন হাসপাতালে চিকিৎসা না
করিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এরপর তাকে ঢাকা
মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে রেফার করা হয়।
অর্কিডের মা জোসনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আগুন দিয়ে পোড়ানোর
পর ছেলের চিকিৎসার জন্য উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় জোরপূর্বক ভিডিও
করে নেয় রিংকু ও তারিনের লোকজন। নাহলে তারা সন্তানকে নিয়ে আসতে
দিচ্ছিল না।
যশোর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী বাবুল আক্তার জানান, গত
৫ মার্চ বুধবার সকালে যশোরের পুরাতন কসবা এলাকায় একজনকে পুড়িয়ে
হত্যাচেষ্টা চালানো হয়। দগ্ধের ৫দিন পর সেই যুবক মারা গেছে। নিহতের
পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো মামলা দায়ের করেনি। তারা এলে মামলা নেওয়া হবে।