অব্যববহৃত টিউবলাইট, বাল্ব, রঙিন বোতল দিয়ে তৈরি হচ্ছে খেলনা ,শো-পিচ আপণ মনে অনন্য শিল্পকর্ম তৈরি করছেন যুবক সাজ্জাদ

0
39

রাহাত আলী,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুর পৌর শহরের তাহেরপুর গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন নামের এক যুবক পুরানো ও অব্যবহৃত কাচের বৈদ্যুতিক টিউবলাইট, বাল্ব, কাচের বিভিন্ন রঙিন বোতল ইত্যাদি ব্যবহার করে অনন্য শিল্পকর্ম তৈরি করছেন।তার এই সৃজনশীল কাজ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং পরিবেশ বান্ধব এই উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে। নিপুন হাতে সাজ্জাদ তার শিল্পকর্মে পুরানো জিনিসপত্রকে নতুন জীবন দিচ্ছেন, যা শুধু দৃষ্টিনন্দনই নয় বরং পরিবেশ সুরক্ষারও একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। তিনি বিভিন্ন ধরনের খেলনা, শো-পিস এবং সাজসজ্জার সামগ্রী তৈরি করছেন, যা স্থানীয় বাজারে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়ে তা দেশ দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়েছে।তার তৈরি শিল্পকর্ম বিভিন্ন মেলা,সভা-সমাবেশ জনাকীর্ন কোন অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হচ্ছে এবং শিশুছাড়াও সব ধরনের মানুষেরা এগুলো কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সাজ্জাদের শিল্পকর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তার কাজকে সাজ্জাদের আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। শিল্পী সাজ্জাদ হোসেন বলেন,আমি প্রান্তিক ও শ্রমজীবি পরিবারে আমার জন্ম।আমার পৈতৃক নিবাস কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর এলাকায়। অঅমাদের পূর্বপুরুশির পেশা ছিল কাঠ,বাশ ,বেত দিয়ে বিভিন্ন খেলনা ,শো-পিচ নিজ হাতে তৈরী করে তা বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা।আমিও বেশিদূর লেখা পড়া করতে পারিনি।আমাদের সেই হাতের তৈরী বিভিন্ন জিনিসপত্র চাচা জিন্নাত আলীর সাথেই বিক্রি করে বেড়াতাম।চাচা আমাকে অনেক জিনিস তৈরি করা শিখিয়েছেন।বছর পাচেক আগে অভাবের তাড়নায় বাড়ী থেকে চিটাগাং গিয়েছিলাম।সেখানে গার্মেন্টেসের অব্যবহৃত টিউবলাইট এখানে সেখানে ফেলানো দেখতে পাই।মনে স্থির করলাম এটা দিয়ে কিছু করা যায় কি না।চাচার পরামর্শ নিয়ে বিশেষ ধরনের একটি কেরোসিন জ্বালানীর একটি ল্যাম্প তৈরি করি। এবার অব্যবহৃত টিউব লাইটটি পরিস্কার করে ল্যাম্পের তাপে বাকিয়ে এবং একটি কৌশলে বিভিন্ন ধরনের খেলনা ,শোপিচ তৈরী করা শুরু করলাম।আমার মন যখন যা চাই তাই-ই তৈরী করে ফেলি। এসকল শিল্পকর্ম যা এলাকা এবং দেশের বিভিন্ন জেলা এমনকি অনেকে বিদেশেও নিয়ে যাচ্ছে। আমি গরীব,আমাদের কোন জমি-জমা নেই।আমি যদি বড় করে শিল্পের মত করতে পারতাম তা হলে এখান থেকে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো।মনিরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ বলেন,সাজ্জাদ সামান্য অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল একজন যুবক সে বেকার যুব সমাজের জন্য উদাহরণ।তার এই প্রচেষ্টা অন্যান্য যুবকদেরও অনুপ্রাণিত করছে এবং পরিবেশ সুরক্ষায় অবদান রাখছে। এই ধরনের উদ্যোগ শুধু আর্থিক উন্নয়নই নয় বরং স্থানীয় শিল্প ও সংস্কৃতির বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। স্থানীয় বাসিন্দা ক্রীড়াবিদ হায়দার আলী বলেন, সাজ্জাদ অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল।তার শিল্পকর্মকে কুাটির শিল্পের মর্যাদা দিয়ে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ সহযোগিতা দিলে সরকারী-বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারলে এটি একটি বৃহত্তর পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে এবং আরও বেশি মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here