আদালতের নির্দেশনা-মৃত্যুর কারণ জানতে এক বছর পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন, অভিযোগ সত্য হলে হবে হত্যা মামলা

0
60

মোংলা প্রতিনিধি : মোংলায় লিয়াকত মাঝি নামের এক ব্যাক্তির মৃত্যুর কারণ জানতে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মৃত্যুর এক বছর পর মোংলা শ্রমিক কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। গত বছরের ২৮ নভেম্বর নিজ বাড়িতে জমির সিমানা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংর্ষ ও ঘরে আগুনের ঘটনার চার দিন পর খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিয়াকত মাঝির মৃত হয়। ময়না তদন্ত শেষে জানা যাবে মৃত্যুর কারণ বলে জানায় প্রশাসন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মোংলা পৌরসভার মনপুরা সেতুর কাছে বঙ্গবন্ধু সড়ক এলাকায় সেলিম হোসেন মাঝি পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী আবুল কালাম হাওলাদারের ২০-২৫ বছর ধরে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে গত ২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বর সকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে এতে সেলিম মাঝির পিতা লিয়াকত মাঝি সহ উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন। পরে সন্ধ্যা রাতে সেলিম হাওলাদারের রান্না ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এতে থানায় পরস্পর বিরোধী ২টি অভিযোগ হলে কালাম ও মেহদী হাসান হাওলাদারের মামলা না হলেও সেলিম মাঝি বাদি হয়ে ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় প্রতিপক্ষের কালাম ও মেহেদী হাসান সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মোংলা থানায় মামলা করা হয়। এতে মেহদী হাসান ও কালামা হাওলাদার সহ তারা আদালত থেকে জামিনে রয়েছে।
জানা গেছে, ওই সংঘর্ষে আহত লিয়াকত মাঝির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে প্রথমে মোংলা উপজেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাতি করা হলে সেখান থেকে গত ১ ডিসেম্বর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেলে স্বজনরা তাঁর মরদেহ নিয়ে মোংলায় এসে পুলিশকে না জানিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে দাফন করেন লিয়াকত মাঝির স্বজনরা। দাফনের পর পুলিশ লিয়াকত মাঝির মৃত্যুর খবর পেলে কী কারণে তিনি মারা গেছেন, তা জানতে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য ২ ডিসেম্বর আদালতের অনুমতি চেয়ে আবেবদন করেণ পুলিশ ও মামলার বাদি সেলিম মাঝি। এ বিষয়ে পর্যালোচনা শেষে গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে মহামান্য আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করার নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরের দিকে লাশ উত্তোলন করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোংলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নওসীনা আরিফ সহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও মোংলা থানা পুলিশের একটি টিম উপস্থিত থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে পাঠানো হয়।
মোংলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওসীনা আরিফ বলেন, গত বছরের ২৮ নভেম্বর শহরের মনপুরা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় একটি সংঘর্ষের ঘটনার ৪ দিন পর ১ ডিসেম্বর আহত লিয়াকত মাঝি চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেণ। পরে দিন আদালতে লাশ ময়না তদন্তের জন্য আবেদন করলে আদালতের নির্দেশনায় ২৫ নভেম্বর দুপুরে রাশ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে তার মৃত্যুর কারণ। পরে সেই অনুযায়ী মামলা চলবে। যদি বাদির আবেদন সত্য হয় তবে হত্যা মামলা অনুযায়ী মামলা চলবে বলে জানায় এ কর্মকর্তা।
প্রতিপক্ষ কালাম ও মেহদী হাসান হাওলাদার পরিবারের কাছে ২৫ বছর আগে ১২ কাঠা জমি বিক্রি করে মৃত লিয়াকত মাঝি। কিন্ত দীর্ঘদিন সেই জমি বুঝিয়ে না দেয়ায় বাড়ির সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here