ভোমরার চোরাকারবারী গডফাদাররা ধরা ছোঁয়ার বাইরে ভারতীয় ভাইরাসযুক্ত গলদার রেণু আটক

0
263

সাতক্ষীরা ব্যুরো প্রধান : ভারতীয় ভাইরাসযুক্ত গলদার রেণু ভোমরা লক্ষ্মীদাড়ী, গাজিপুর, পদ্মশাখরা, হাড়দ্দহা, কোমরপুর সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ভারতীয় গলদার কয়েক কোটি রেণু বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। আর এই ভাইরাসযুক্ত রেণু দেবহাটা কুলিয়া ব্রিজ সংলগ্ন মৎস্য সেটে বিক্রি হচ্ছে। ভাইরাসযুক্ত রেণু ভারত থেকে পাচারের সাথে আসছে ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ মাদক দ্রব্য। পাচার হচ্ছে হুন্ডির টাকা, স্বর্ণ ও নারী-শিশু।
সাতক্ষীরা ভোমরা সীমান্তের চোরাকারবারীর গডফাদাররা রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ভারত বাংলাদেশ পণ্য পারাপারের জন্য বহনকারীদের দিয়ে পাচার করে থাকে। যদি পণ্য সহ বহনকারীরা ধরা পরে তাহলে সব দিক দিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে পারে গডফাদার চোরাকারবারীরা। গ্রেফতার হওয়া বহনকারীর আইনী সহায়তা বা তার পরিবারের সমস্ত খরচ সহ যদি বহনযোগ্য কিছু ধরা পরে সেটাও গডফাদার নিজ খরচে বহন করে। এভাবেই চোরাকারবারী গডফাদাররা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছে। লক্ষ্মীদাড়ী সীমান্তে মৃত জবেদ কানের ছেলে সাদেক হোসেন চোরাচালানের প্রথম জীবনে ভারতীয় চোরাই মটরসাইকেল ও ফেন্সিডিলের ব্যবসা শুরু করে। পরে হুন্ডির টাকা, স্বর্ণ এবং ভাইরাসযুক্ত ভারতীয় গলদার রেণু পাচার করে বলে এলাকাবাসী জানায়। এখন তার কোটি টাকার ব্যবসা, আলীশান বাড়িতে বসবাস, চোরাচালানের সুবিধার্তে ৪টি বিবাহ করে সংসার করছে। ১ স্ত্রী ভারতে বসবাস করে। ভারত থেকে তাকে রেণু সরবরাহ করত (ভারতীয় মাহজন) কল্পনা নামের এক মহিলাসহ অন্যরা। কল্পনার ১৬ বল (প্রতি বলে ২০ হাজার রেণু পোনা) রেণুর টাকা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আক্তার আত্মসাৎ করেছে বলে লক্ষ্মীদাড়ী গ্রামের মৃত এবাসতুল্লা গাজীর ছেলে আক্তার হোসেন এ প্রতিবেদনকে জানায়। প্রতিদিন সাদেকের সীমান্ত পার হয়ে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় ভাইরাসযুক্ত গলদার রেণু পাচার হয়ে আসছে। বহনকারীরা মটরসাইকেলে মাছের রেণুর বল নিয়ে কুলিয়া মৎস্য সেটে পৌছে দেয়। গত ১৬ জুলাই সাদেকের একটি মাছের চালান বিজিবি আটক করে ভোমরা টাওয়ার নামক স্থানে। বিজিবির সদস্যরা সাদেকের রেণু বহনকারী ভোমরার রায়হানের মটরসাইকেল ও ৮ বল রেণু মাছ আটক করে। এ সময় রায়হান দৌড়ে পালিয়ে যায়। বিজিবির আকৃত মাছ ও মটরসাইকেল হেড কোয়াটারে চালান করে দিয়েছে। চোরাচালানী পণ্য বহনকারী এবং মালিক রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এ ব্যাপারে সাদেক মুঠো ফোনে তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলে আমি শুকটি মাছের আমদানীর ব্যবসা করি।
লক্ষ্মীদাড়ী সীমান্তে মৃত এবাসতুল্লা গাজীর ছেলে আক্তার হোসেন তার ভাইপো জামাত আলীর ছেলে কামরুল স্বর্ণ, হুন্ডি পাচারকারী। বর্তমানে ভারতে থেকে ভাইরাসযুক্ত গলদার রেণু পাচার করে নিয়ে আসছে। ২০০০ সালে আক্তার বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত রোগী অবৈধভাবে ভারতে চিকিৎসার জন্য যেত এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করত তাদের লাশ লক্ষ্মীদাড়ী সীমান্ত দিয়ে দেশে পাচার করে নিয়ে আসত অধিক অর্থের বিনিময়। হুন্ডি, স্বর্ণ, ভাইরাসযুক্ত ভারতীয় গলদার রেণু, পার করে কোটি কোটি টাকার মালিক এখন আক্তার। দৃশ্যমান তার কোন ব্যবস্থা নেই। হুন্ডির টাকা বহন করে সীমান্ত নেওয়ার সময় বিজিবির তাড়া খেয়ে কিছু টাকা ফেলে দিয়ে বাকিটা আত্মসাৎ করেছে। ২০১৯ সালে আগস্ট মাসে ভোমরার এক এফএস (বিজিবির গোয়েন্দা) সদস্য হুন্ডির টাকাসহ আক্তারকে ধরার চেস্টা করলে সে কিছু টাকা ছড়িয়ে বাকিটা নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং ঐ কাছে থাকা অবশিষ্ট টাকা আত্মসাৎ করে। একই বছর নভেম্বর মাসে বিজিবির তাড়া খেয়ে হুন্ডির টাকা নিয়ে দৌড়ে পালায়। লক্ষ্মাদাড়ী গ্রামের যে সমস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের ভীটাবাড়ি ও জমি বিক্রি করে ভারতে চলে গেছে তাদের সমস্ত সম্পত্তি আক্তার ক্রয় করে নিয়ে হন্ডির মাধ্যমে তাদের অর্থ ভারতে পাচার করে দিয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে আক্তার কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদন কে জানান আমি ভাইরাসযুক্ত গলদার রেণুর ব্যবসা করে থাকি। রেণু পাচারের বিষয়টি তিনি স্বীকার করে বলেন লক্ষ্মীদাড়ীর সাদেক, ধূড় রশিদ, গয়েসপুরের আনারুল, পদ্মশাখরার কবির এরা গলদার রেণু পাচারের একটি সেন্টিগেট তৈরী করে। এরা আমাকে সাথে নেওয়ার প্রস্তাব করলে আমি তাদের সাথে যুক্ত হয়েছিলাম। আমি যখন ৪/৫ বল করে গলদার রেণু ভারত থেকে নিয়ে আসি তখন এফএস (বিজিবির গোয়েন্দা) আমার মাছ আটক করে এবং ওদের রেণুর পোনা আটক করে না। এরপর আমি ওদের থেকে বেরিয়ে এসে নিজে ব্যবসা করি গলদা রেণুর। সাদেক ভারতের কল্পনার ১৬ বল রেণু মাছের টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমার আত্মীয় স্বজনরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চাকরী করে। তিনি ভোমরার কয়েক জনের নাম উল্লেখ করে জানান আমি মাসে তাদের টাকা দেয়।
ভোমরা সীমান্তবাসীদের অভিমত এই সমস্ত চোরাকারবারীর গডফাদাররা থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।বহনকারীদের মাধ্যমে এইসব গডফাদাররা পারাপার চালিয়ে যায়। ভারতীয় চোরাকারবারীদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের মাধ্যমে এরা পাচার কার্যক্রম চালিয়ে বলে এলাকাবাসীদের অভিমত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here