করোনা পাল্টে দিয়েছে সময়ের সংজ্ঞা, বেড়েছে মাল্টিটাস্কিং

0
646

যশোর ডেস্ক : করোনাভাইরাস মহামারীতে আমাদের ঘড়ির কাঁটা থেমে গিয়েছে। ঘোলাটে হয়ে পড়েছে দিন-তারিখ মঙ্গলবার হয়ে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার, বুধবার হয়ে যাচ্ছে রোববার। শুক্রবার বলে কোনো বার নেই। নেই কোনো ছুটির দিন। আছে শুধু গতকাল, আজ আর আগামীকাল। সিএনএন অগোছালো রুটিনে কর্ম স্থির করা কঠিন হয়ে পড়েছে, স্থবির হয়ে পড়েছে মস্তিষ্ক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবেই মহামারী আমাদের বুদ্ধিগত স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে। প্রভাব ফেলছে আমাদের চিন্তায়, শেখায় ও মনে রাখায়। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যার অধ্যাপক এলিসা এপেল বলেন, ‘চেনাজানা পরিবেশের পরিবর্তন, সামাজিক ছন্দের গতিস্খলনের ফলে আমাদের মস্তিষ্কের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর কারণে অনেকেই ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন না।’ এপেল বলেন, সূর্যালোক আমাদের সার্কাডিয়ান রিদম অর্থাৎ শরীরবৃত্তিয় ছন্দকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেই সঙ্গে এটি শারীরিক ও সামাজিক নিয়মের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। সকাল-বিকেলের কাজ, সপ্তাহিক ধর্মীয় রীতিসহ আমাদের দৈনন্দিন রুটিন এই ছন্দের ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু আমরা এই রুটিন হারিয়ে ফেলেছি। ছুটির দিন আমাদের কাছে একটি সীমারেখা বা নতুন কিছু শুরু করার ধাপ ছিলো। কিন্তু এখন ছুটির দিন যা কর্মদিবস ও তা। ঘরে বসে অফিস করার কারণে অনেক কর্মীকেই দীর্ঘ সময় কাজ করতে হচ্ছে। এমনকি তারা ছুটির দিনেও এখন কাজ করছেন। কনসার্ট, ইভেন্ট ও বেড়াতে যাওয়ার মতো সুখী মুহুর্তগুলো স্মৃতি হয়ে পড়েছে।
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল এসেসিয়েশনের এসোসিয়েট নির্বাহী পরিচালক লেন বাফকা বলেন, ‘রুটিন হারানোর ফলে এখন প্রতিটি দিনকে আলাদা বৈশিষ্ট দেয়ার জন্য অনেক মানসিক শক্তি য় হচ্ছে। যখন আমাদের রুটিন ছিলো এই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ভাবতে হয় নি। আমরা বার দেখেই স্থির করেছি এ দিনে কি হবে। এমনকি যারা এ পরিস্থিতিতেও কাজে যাচ্ছেন তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও তিগ্রস্ত হচ্ছে। সামাজিক দূরত্বের বিষয়গুলো মনে রাখা, মাস্ক পরিধান করা, বস্তুতে স্পর্শ এড়িয়ে চলাসহ নানা নিয়ম মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। বেড়েছে মাল্টিটাস্কিং। বাচ্চাদের পড়াশোনা, পরিবারের খেয়াল রাখা সহ অফিসের কাজ সব একই জায়গায় থেকে একই সময়ে করতে হচ্ছে। চাপ পড়ছে মস্তিষ্কের ধারণ মতায়। এই অবস্থায় মনোরোগবিদ ও মনোবিজ্ঞানীরা কিছু নিয়ম মেনে চলতে বলেছেন। প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে তারা কাজে বিরতি নেয়া, ব্যয়াম করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে বলেছেন। বিরত থাকতে বলেছেন বারবার খবর দেখা হতে। কারণ সময় ভ্রম ব্যতীত আর কিছুই নয়। এটি পুরোপুরিই আপেকি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here