ঝিনাইদহে আ’লীগে যোগদান নিয়ে সংঘর্ষে আহত যুবকের মৃত্যু

0
360

কামরুজ্জামান লিটন ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ শহরের খাজুরা গ্রামে আওয়ামী লীগে যোগদানকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত ফারুক হোসেন (৩৪) মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত ফারুক হোসেন ওই গ্রামের সাবেক চরমপন্থি নেতা গোলাম বারীর ছেলে। বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের পৌর এলাকার খাজুরা গ্রামে এ সংঘষের ঘটনা ঘটলে ফারুক হোসেনসহ উভয় পক্ষের ২০/২২ জন আহত হন। গ্রামবাসি সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খাজুরা গ্রামের জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩৫/৪০ জন নেতাকর্মীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লিটনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগদানের পর পিকনিক করেন। ওই পিকনিকে পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সরোয়ার জাহান বাদশা, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান খোকা, ফুরসন্দির ইউপি চেয়ারম্যান এড আব্দুল মালেক ও নলডাঙ্গার চেয়ারম্যান কবির হোসেন উপস্থিত ছিলেন। পিকনিক করার পর আওয়ামীলীগের আরেক গ্রুপ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বুধবার সকাল থেকে আওয়ামী লীগের এক পক্ষের নেতা আবুল হোসেনের লোকজন যোগদান ইচ্ছুক নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হয়। সন্ধ্যায় আবুলের সমর্থকরা জাহিদের লোকজনের উপর হামলা চালালে তাদের মাঝে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে ফারুক হোসেনসহ দুই জনের শারিরীক অবস্থা খারাপ হলে তাদের রাতেই ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে ফারুক হোসেন মারা যান। নিহত ফারুকের স্বজনরা অভিযোগ করেছে পুলিশ উল্টো তাদের হয়রানী করছে। নিহত ফারুকের স্ত্রী সুমি বেগম ও ভাইজি শাবনুর অভিযোগ করেন, তারা আওয়ামীলীগে যোগদান করায় প্রতিপক্ষ গ্রুগ সহ্য করতে পারছিল না। তিন মাস ধরে তাদের নানা ভাবে অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছিল। ঘটনার দিন ফারুক শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে পাচটিকারী নামক স্থানে আবুন মন্ডল, আব্দুল, সরোয়ার, বাচ্চু, পান্নু, সলোকসহ প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন বাধা দিলে সে বাড়ি ফিরে আসে। সন্ধ্যায় খাজুরা গ্রামে মানিকের মার্কেটে জাহিদের দোকানে চা পান করতে গেলে সেখানেই প্রতিপক্ষরা হামলা করে। মামলার বাদী মনোয়ার হোসেন মঙ্গল জানান, তারা ৬ জুন ঘরোয়া পরিবেশে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছেন। যোগদানের পর থেকেই প্রতিপক্ষের চক্ষুশুলে পরিণত হয়। তিনি বলেন আমি ১১ জনকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। মামলা রেকর্ড হয়েছে কিনা জানি না। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের নেতা আনিছুর রহমান খোকা জানান, খাজুরা গ্রামে থেকে ওরা যোগদান করতে চেয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যোগদান অনুষ্ঠান করা হবে এমন কথা ছিল। তবে তারা প্রতিবছর একটি বাৎসরিক পিকনিক করেন। সেই পিকনিকে আমরা যোগদান করি। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস জানান, খাজুরা গ্রামে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here