মোঃ হাচিবুর রহমান, কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি ঃ নড়াইলের বড়দিয়া কলেজ গেইটে দাশ ও সততা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ বানিজ্যিক মিটারে চলায় সংলগ্ন এলাবাসী লো-ভোল্টেজের স্বীকার হচ্ছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠান দুটির মালিক দ্বয় হলো দিপংকর দাশ ও টুটুল দাশ । ভুক্তভুগীরা বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ ক্ষুদ্রশিল্প মিটারে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের পারমিটসহ চালানোর আইন থাকলেও এদের কাছে কোন কাগজ নেই। আবাসিক, বানিজ্যিক ও ক্ষুদ্র শিল্প মিটারের ক্ষেত্রে ট্রান্সমিটারের লোড নির্ধারণ করা হয়। বানিজ্যিক মিটারে ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ চালানোয় ট্রান্সমিটারের লোড বেশী পড়ার কারণে তৎসংলগ্ন আবাসিক মিটারগুলো লো-ভোল্টেজে স্বীকার হচ্ছে। ফলে বিদ্যুৎ চালিত সরঞ্জামাদি প্রায়ই বিকল হয়ে যাচ্ছে। বড়দিয়া অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ নজরুল ইসলামকে বলেও তারা কোন প্রতিকার পায়নি বলে জানান।
(২৮ জুন) রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বড়দিয়া কলেজ সংলগ্ন দাশ ও সততা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপে বানিজ্যিক মিটারে ওয়েল্ডিং এর কাজ চলছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিকদ্বয়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, আমরা মিটারের জন্য আবেদন করেছি ৮/৯ মাস হলো কিন্তু মিটার এখনো পাইনি। আমাদের কাছ থেকে একবার ৩,০০০/= টাকা করে জরিমানা নিয়েছে নজরুল সাহেব। সততা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ এর মালিক টুটুল দাশ বলেন, মিটার বাবদ নজরুলের মিডিয়াকে আমি ৬২,০০০/= হাজার টাকা দিয়েছি এখনো মিটার পাইনি।
এ বিষয়ে বড়দিয়া অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ নজরুল ইসলামের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। পরবর্তীতে বড়দিয়া অভিযোগ কেন্দ্র গিয়ে দেখা যায় কোন সাইন বোর্ড নেই। কোন আগুন্তক বুঝতেই পারবেনা এটা বিদ্যুৎ অফিস। সাইনবোর্ড নেই কেন জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে এখনো লাগানো হয়নি। ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ এর বিষয়ে তিনি বলেন, ওদেরকে আমি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ চালাতে নিষেধ করেছি। আমি চালানোর নির্দেশনা দেইনি। তবে ওদের কাছ থেকে প্রতিমাসে ৩,০০০/= টাকা করে জরিানা আদায় করছি। তবে তিনি জরিমানার রশিদ দেখাতে পারেন নি। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ জানা সত্ত্বেও নজরুল ইসলাম উক্ত দাশ ও সততা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ এর মিটার দিতে বিলম্ব করছে এবং ওদের কাছ থেকে মাশোহারা নিয়ে চালানোর পারমিট দিয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, নজরুল ইসলাম প্রায়ই ওই ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপে আসেন। তদন্ত পূর্বক আরো জানা যায় নজরুল ইসলাম পূর্বেও বড়দিয়া অফিসে ছিলেন তখনও তার রেকর্ড ভাল ছিলনা। তার সার্ভিসে এলাকার মানুষ ছিল অতিষ্ঠ। পরবর্তীতে বদলী হয়ে নজরুল ইসলাম লোহাগড়া থানার মানিকগঞ্জে চলে যান ওখান থেকে কালিয়ার চাচুড়ি অফিসে আসেন এবং পুনরায় ২০২০ সালের প্রথম দিকে চেষ্টা তদবিরের মাধ্যমে আবারো বড়দিয়া আসেন। বড়দিয়া আসার ব্যাপারে নজরুল ইসলাম এতটা উৎসুক কেন? এটাই এলাকাবাসী জানতে চায়। বড়দিয়া বাজার বনিক সমিতির সেক্রেটারী ডাঃ জগদীশ চন্দ্র সরকার বলেন, আমার ভাড়ার ঘর (বড়দিয়া মসজিদ রোড) ছেড়ে আমি নিজস্ব ভবনে আমার ব্যবসা স্থানান্তর করায় আমার নামীয় মিটারটি পূর্বের ঘরে থেকে যায়। নজরুল ইসলামকে মিটারটি স্থানান্তর করাতে বললে আমাকে কালিয়া যেতে বলেন। সামান্য মিটার স্থানান্তর করাতে যদি কালিয়া অফিসে যেতে হয় তাহলে বড়দিয়া অফিসের প্রয়োজন কি? আমার পেশায় সর্বদা ব্যাস্ত থাকায় কালিয়া যেতে পারিনি আমার কাজটি ও হয়নি। ৭/৮ মাস মিটারটি ব্যবহার না করেও বিল টেনে যাচ্ছি। এর একটা সুষ্ঠ সমাধান চাই। এ বিষয়ে যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ডি.জি.এম (কালিয়া জোনাল) বলেন, বিষয়টি তদন্ত পূর্বক সত্যতা প্রমানে যথাযথ ব্যবস্থা নিব।