নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে পুলিশের হাতে গাঁজাসহ আটক যুবক জন গাজী ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানায় পার পেয়ে গেলেন। রোববার সকালে সহকারী কমিশনার জাকির হোসেন শহরের নতুন উপশহর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আসামি জন গাজী উপশহর বাদশাহ ফয়সাল ইসলামী ইন্সস্টিটিউটের সাবেক প্রধান শিক্ষক আছহাবুল গাজির ছেলে।
শনিবার সন্ধ্যায় উপশহর বাদশাহ ফয়সাল স্কুলের পিছন থেকে উপশহর ফাঁড়ির এএসআই শাহাবুদ্দিন একশ’ গ্রাম গাঁজাসহ জন গাজীকে আটক করে। আটকের সময় স্থানীয় অনেকে তা প্রত্যক্ষ করেন। আটকের বিষয়টি এলাকায় প্রচার হয়ে যায় মোটা অংকের টাকায় চুক্তির বিনিময়ে আসামিকে ছেড়ে দেয়ার জন্য দরকষাকষি চলছিল। বিষয়টি প্রচার হওয়ায় বিপাকে পড়ে পুলিশ। অবস্থা বেগতিক দেখে আটকের বিষয়টি ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সাইফুল মালেককে অবগত করে এএসআই শাহাবুদ্দিন। শনিবার রাতে গাঁজাসহ আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কাছে পুরোটাই অস্বীকার করে পুলিশ। অথচ রোববার সকালে পুলিশের হাতে আটক সেই আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির হোসেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জন গাজীকে ছাড়াতে পিতা আছহাবুল গাজি ও স্কুলের জনৈক শিক্ষক উপশহর পুলিশ ফাঁড়িতে যান। ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই সাইফুল মালেক এক লাখ টাকা দাবি করেন। পরে ৪০ হাজার টাকা রফায় জনকে ফাঁড়ি থেকে ছেড়ে দেয়ার সমঝোতা হয়। এরমধ্যে বিষয়টি সংবাদকর্মীরা জানার পর ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল মালেককে ফোন দেন। সেই সময় তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি সাংবাদকর্মীদের বলেন, থানায় একটি মার্ডার মামলা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। আটকের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। ফাঁড়িতে শাহাবুদ্দিন আছে তার কাছে ফোন দেন। পরে এএসআই শাহাবুদ্দিনের কাছে সংবাদকর্মীরা ফোন দিলে তালবাহানা শুরু করেন।
তিনি বলেন, আমি একটু বাইরে আছি পরে জানাচ্ছি। প্রায় ঘন্টা পার হলেও এএসআই শাহাবুদ্দিন কিছু জানান নি। এক ঘন্টা পর ৫ বার ফোন দেয়ার পর এএসআই শাহাবুদ্দিন ফোন ধরে বলেন, এসআই সাইফুল মালেক স্যার ফাঁড়িতে আছেন; ওনার কাছে ফোন দেন।
এসআই সাইফুল মালেককে ফোন দিলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, আটক জনের কাছে কিছু পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে সাংবাদকর্মীরা। তাদের হস্তক্ষেপে জন গাজীকে রাতে ফাঁড়ি থেকে ছাড়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। রোববার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির হোসেন ঘটনাস্থল উপশহরে গিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে জন গাজীকে মুক্তি দেন।
এলাকাবাসী জানায়, উপশহর ফাঁড়ি পুলিশ গাঁজা মাদকসহ অনেককেই আটক করে। কিন্তু কাউকেই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জন গাজীর মতো ছাড়া হয় না। আটকের পর পুলিশ সবাইকে মামলা দিয়ে আদালতে চালান দেয়। কিন্তু জনকে ছাড়ার ব্যাপারে ব্যতিক্রম ঘটায় বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।