যশোরে ব্যবসায়ীকে ফাঁসাতে গিয়ে তিন সন্ত্রাসী পুলিশের হাতে আটক

0
84

যশোর অফিস : যশোরে ব্যবসায়ীকে ফাঁসাতে গিয়ে তিন সন্ত্রাসী পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। গত ২৯ মে রাতে এলাকা থেকে ওই তিনজনকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আটক তিনজনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও চাঁদাবাজির অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য ২৬ দিন আগে শহরের শংকরপুরে দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে ইসলাম প্লাস্টিকের কারখানায় দুইটি অস্ত্র রেখেছিল তারা।
গতকাল মঙ্গলবার আটক তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে দুইজনে ওই অস্ত্রের মালিক এবং চাঁদা না পেয়ে অস্ত্র রাখার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ জবানবন্দি শেষে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন। আটককৃতরা হলো, শহরের শংকরপুর জমাদ্দারপাড়ার বাসিন্দা বর্তমানে খড়কি হাজামপাড়ার হাজেরা বেগমের বাড়ির ভাড়াটিয়া মৃত মুরাদ সরদারের ছেলে চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুম্মান, খড়কি হাজামপাড়ার হাদিউজ্জামান মোল্যার ছেলে আরমান হোসেন ও সদর উপজেলার কাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বর্তমানে শংকরপুর জমাদ্দারপাড়া যশোর কলেজ রোডের হোসেন মোল্যার বাড়ির ভাড়াটিয়া জাকির হোসেনের ছেলে রাহাত হোসেন।
অস্ত্র মামলায় পলাতক অন্য আসামিরা হলো, শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া তুলোতলার রিপন হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম হোসেন প্রিন্স, চাঁচড়া রায়পাড়ার ডেপ পকেটমারের ছেলে সাগর ও বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মোড় ফুডগোডাউন এলাকার রবিউল ইসলাম রবির ছেলে শুভ।
ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলামের দায়ের করা মামলা বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা শহরের শংকরপুর জমাদ্দারপাড়ার ফারদিন গ্লাস এ্যান্ড প্লাস্টিক স্টোর সংলগ্ন তরিকুল ইসলামের ইসলাম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মধ্যে থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় দুইটি ওয়ানস্যুটারগান উদ্ধার করে। এই ঘটনায় র‌্যাবের ডিএডি জাফর আলী কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই জিডির সূত্র ধরে ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম তদন্ত শুরু করেন। এক পর্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে ওই এলাকার ব্যবসায়ী আশরাফুল হাসান বিপ্লবের কাছে ওই আসামিরা এক লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। কিন্তু চাঁদার টাকা না দেয়ায় বিপ্লবকে ফাঁসাতে দুটি অস্ত্র সংগ্রহ করে সন্ত্রাসী শুভ। তবে অস্ত্র সংগ্রহ এবং ওই কারখানায় রাখার ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদস্যও জড়িত বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। কারণ শুভ আইন শৃঙ্খলা কোন একটি বাহিনীর কথিত সোর্সের কাজ করে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। সে কারণে চাঁদার টাকা না পেয়ে সেখানে ওই অস্ত্র রাখা হয়েছিল। কিন্তু র‌্যাবের সদস্যরা অস্ত্র দুইটি পরিত্যাক্ত উদ্ধার করে থানায় একটি জিডি করেছিল।
অপরদিকে চাঁদা দাবির ঘটনায় ব্যবসায়ী আশরাফুল হাসান বিপ্লবের মামলায় বলা হয়েছে,গত ২০ এপ্রিল ওই আসামিরা ব্যবসায়ী আশরাফুল হাসান বিপ্লবের কাছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। না দেয়ায় তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে গত ৪ মে রাত ৮টার দিকে আসামিরা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশে দুইটি অবৈধ অস্ত্র রেখে আসে। আবার তারাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংবাদ দেয়। পরে র‌্যাব এসে ওই অস্ত্র উদ্ধার করে পরিত্যাক্ত দেখিয়ে থানায় একটি জিডি করে। ডিবি পুলিশ তদন্ত করে অস্ত্রের মালিক এবং কেন রাখা হয়েছে সেই তথ্য সংগ্রহ এবং ওই তিনজনকে আটক করেছে। আটককৃত আরমান ও রাহাত অস্ত্র কেন কিভাবে রাখা হয়েছে আদালতে সেই বর্ণনা দিয়েছে। এছাড়া এদিন আটক জুম্মানকে ৫দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম।
ডিবি পুলিশের ওসি রূপণ কুমার সরকার জানিয়েছেন, চাঁদা দাবিতে রাখা অস্ত্রের মালিকের সন্ধান পাওয়া গেছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় থানায় মামলার পরে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here