(নড়াইল জেলা) প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার গণ্ডব গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় পুলিশ নড়াইল জেলা বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম কাজীকে (৫০) আটক করেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট আটক করা হয়েছে ১৩ জনকে। বুধবার এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার রাত্রে মূলহোতা নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য শেখ সুলতান মাহমুদ বিপ্লবসহ ৭৭ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে মামলা নং ১২। গণ্ডব গ্রাম থেকে এ পর্যন্ত পুলিশ নয়টি ঢাল উদ্ধার করেছে। লোহাগড়া থানার সেকেন্ড অফিসার এস,আই মিল্টন কুমার দেবদাস জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার আগে গোপন বৈঠক করবার সময় শালনগর থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিএনপি নেতা কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম কাজীকে আটক করা হয়।
প্রসঙ্গত,ট্রিপল মার্ডারের মূলহোতা ইয়াবা ব্যবসায়ী, জুয়াড়ি ও নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য শেখ সুলতান মাহমুদ বিপ্লব আটক বিএনপি নেতার শ্যালক।
গ্রামবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,কাশিপুর ইউনিয়নের গণ্ডব গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে মিরাজ মোল্যা নেতৃত্বাধীন গ্রুপ এবং সুলতান মাহমুদ বিপ্লব নেতৃত্বাধীন গ্রুপের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল।
এ বিরোধের জের ধরে উভয় গ্রুপ বুধবার দুপুর তিনটার দিকে ঢাল, সড়কি, রামদাসহ নানা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গণ্ডব গ্রামের গো-হালটে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের কোপে ওই গ্রামের মনতাজ মোল্যার ছেলে হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিল মোল্যা (৫২), মৃত মাজেদ মোল্যার ছেলে মোক্তার মোল্যা (৫৮), সাইফার মোল্যার ছেলে রফিক মোল্যা (৫০) নিহত হন।
পোস্টমর্টেম শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহ লোহাগড়া শহরে আনা হয়।
পরে উপজেলা পরিষদের সামনে ও ভেতরে গ্রামবাসীসহ নিহতের স্বজনরা ঝাঁড়ু মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, ইয়াবা ব্যবসায়ী ও জেলা পরিষদের সদস্য সুলতান মাহমুদ বিপ্লব ও তার চাচা ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। অবশ্য, অভিযোগ বিষয়ে সিআইডির (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট) ফরেনসিক শাখার ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম স্থানীয় সাংবাদিকদের ফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সঠিক নয়।
আমি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। প্রকৃত হত্যাকারীদের শাস্তি হোক,আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে বলেও জানান।
গণ্ডব গ্রামের মো:কবির হোসেন জানান,বৃহস্পতিবার বিকেলে জানাজা শেষে নিহতদের মরদেহ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারসহ গ্রামবাসীদের মধ্যে চলছে শোকের মাতম। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। গতরাতে মোমরেজ মোল্যা বাদী হয়ে ৭৭ জনের নমে মামলা দায়ের করেছে। এ পর্যন্ত ১৩ জনকে আটক করা হয়েয়ে বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।