স্বামী ও শশুর-শাশুড়ির নির্মম নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ মুক্তা, থানায় অভিযোগ

0
349

রাজগঞ্জ প্রতিনিধি : যৌতুকলোভী স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির নির্মম নির্যাতনের শিকার এক সন্তানের জননী মুক্তা দাস (২৪)। যৌতুকের টাকা বাবার বাড়িতে আনতে না যাওয়ায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি অমানুষিক নির্যাতন চালায় গৃহবধূ মুক্তার ওপর। মুক্তাকে পিটিয়ে ফুলা জখম করেছে তারা। এঘটনায় মুক্তার বাবা রাজগঞ্জের মোবারকপুর গ্রামের মান্দার দাস বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগের বিবরণে জানাগেছে, মুক্তার বাবা দিনমজুর মান্দার দাস। দিনমজুর হলেও মেয়ের সুখের জন্য ৬ বছর পূর্বে হিন্দু আইন মেনে ধুমধাম করে মুক্তাকে বিয়ে দেয় তার বাবা। কলারোয়া উপজেলার উত্তর সোনাবাড়িয়া গ্রামের হরিপদ দাসের ছেলে তুফান দাসের সাথে বিয়ে হয় মুক্তার। বিয়ের সময় মুক্তার বাবা মান্দার মেয়ের সুখের জন্য বিভিন্ন আসবাপত্রসহ নগত টাকাও উপহার দেন। দাম্পত্য জীবন সুখের হলেও কিছুদিন পর যৌতুকের দাবিতে শ্বশুর-শাশুড়ির জ্বালা-যন্ত্রণা ও নির্মম নির্যাতন শুরু হয় মুক্তার ওপর। মেয়ের সুখের জন্য দরিদ্র বাবা মান্দার পর্যায়ক্রমে প্রায় লক্ষাধীক টাকা স্বামী ও তার শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে তুলে দেন। কিন্তু এতেও রক্ষা পায়নি মুক্তা। দিনের পর দিন নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলতে থাকে। সর্বশেষ গত ১৮ জুন দুপুর ১২টার দিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় স্বামী, শাশুড়ী, মামা শশুর ও শশুর মিলে গৃহবধূ মুক্তা দাসকে এলোপাতাড়ী ভাবে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফোলা জখম করাসহ হত্যার উদ্দেশ্যে তার চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এতেও খ্যান্ত হয়নি তারা। রশি দিয়ে বেঁধে গলিয় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এমন অবস্থা দেখে স্থানীয় লোকজন এসে মুক্তাকে উদ্ধার করে। পরে তারা মুক্তাকে চিকিৎসা না দিয়ে ঘরের ভিতর আটকে রাখে। এতে মুক্তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। খবর পেয়ে মুক্তার বাবা অসহায় মান্দার দাস মেয়েকে উদ্ধার করতে গেলে নেশাখোর মেয়ে জামাইসহ তার পরিবারের লোকজন তাকে খুন, জখম করার হুমকি দেয়। এঘটনায় কার্ত্তিক দাসের ছেলে রামপদ দাস (৫০), তারাপদ দাসের স্ত্রী শুভাসি (৫০) ও রামপদ দাসের স্ত্রী দেরোকা (৪০) কে স্বাক্ষী করে, হরিপদ দাসের ছেলে তুফান দাস (২৫), হরিপদ দাসের স্ত্রী ফুলবাশি (৬৫), মৃত বিনোদ দাসের ছেলে সত্যপদ দাস (৫০) ও হরিপদ দাস (৭৫) কে বিবাদী করে গত ২১ জুন সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। মান্দার দাস, মেয়ে নির্যাতনের বিচার চেয়ে এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here