গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া (খুলনা) : সংস্কারের মাত্র দেড় বছরের মাথায় বেহাল দশা টিপনা-কদমতলা সড়ক। সড়কটির বেশিরভাগ স্থানে খোয়া উঠে ছোটবড় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত সেখানে ঝুঁকি নিয়ে মালবাহী গাড়ি চলাচল করছে। মানুষের চলাচলেও পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
জানা গেছে, খুলনা সদর থেকে ১৭ থেকে ১৮ কিলোমিটার দুরে ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা-নতুন রাস্তা মোড়। মোড় থেকে সাড়ে ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়ক টিপনা-কদমতলা। এটি গিয়ে মিশেছে টিপনা থেকে কদমতলা নদীর খেয়াঘাটে। খেয়াঘাট পেরুলেই মাগুরখালী ইউনিয়ন। যার পশ্চিম সীমানা ছুঁয়েছে পাইকগাছা উপজেলা।
অন্যদিকে সড়কটির উৎপত্তি খর্ণিয়া ইউনিয়নের আঙিনায় হলেও মাঝে দুই পাশে রয়েছে শোভনা ইউনিয়ন।
সুতরাং প্রতিনিয়ত সড়কটি ব্যবহার করে তিনটি ইউনিয়নের মানুষ।
এছাড়া ওই এলাকায় উৎপাদিত শাক-সবজি ও মাছ বাজারজাত করণেও সড়কটি ব্যবহৃত হয়।
স্থানীয়রা জানান, জিয়ালতলা নামক স্থানে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে অন্তত ৯ থেকে ১০টি বাস ও ২০ থেকে ২২টি মাহেন্দ্র- ইজিবাইক প্রতি মঙ্গলবার এ সড়কে লোক বহন করে।
সরেজমিন দেখা গেছে , সাড়ে ৮ কিলোমিটার সড়ক জুড়েই ছোট-বড় গর্ত। অনেক স্থানে পিচ উঠে ছিটকে পড়েছে। কোথাও কোথাও খোয়া বের হয়ে পড়েছে । চলতি বর্ষায় গর্তে পানি ও কাঁদা জমে ভোগান্তি তৈরি করছে।
গোনালী গ্রামের হুমায়ুন কবির জানান, দেড় বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়। অথচ এর মধ্যেই সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চরম ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীবহন করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সন্দিপন বিশ্বাস বলেন, সড়কটি টেকসই উন্নয়ন করা হয়নি। সে কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন এই সড়কে মালবাহী ভ্যান গাড়ি পার করতে দুই-তিন জন লোক লাগে। সময়ও নষ্ট হয়।
ভ্যান চালক দুলাল দেব নাথ বলেন, চারজন মানুষ নিয়ে এ সড়কে গাড়ি চালানো বর্তমানে কঠিন হয়ে পড়ছে। ভাঙা চোরা স্থানে গাড়ির চাকা পড়লেই যাত্রী নামিয়ে গাড়ি উঠাতে হয়। অনেক সময় গাড়ির চাকা বেঁকেও যায়।
জিয়ালতলা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাত্রী নিয়ে যাওয়া বাস চালক সবুজ সরদার বলেন , সরু রাস্তা , এরপর পুরো সড়ক ভাঙাচোরা। রাতে বেশ ঝুঁকি নিয়েই গাড়ি চালাতে হয়।
ওই বাসের যাত্রী পরিমল মন্ডল বলেন, বাস হেলেদুলে চলে। ফলে বাসে বসে যেতে কোমরে ব্যাথা হয়ে যায়। রাতে ভয়ও কাজ করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জ্যোৎসা এন্টার প্রাইজ সড়কের একাংশের কাজ বাস্তবায়ন করে। বাস্তবায়নের সময়ই নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারে অভিযোগ ওঠে। এলাকাবাসী প্রতিবাদও করেছিল। কিন্তু এলজিইডি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা কানে নেয়নি। জনগণকে এখন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন , সড়কটি সংস্কারের সময় তিনি এই কর্মস্থলে ছিলেন না। তবে সড়কটি উঁচু এবং নতুন করে করতে হবে। প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে।